وَالصَّافَّاتِ صَفًّا (1)
ভেবে দেখো তাদের যারা কাতারে কাতারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে,
فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا (2)
আর যারা বিতাড়িত করে প্রবল বিতাড়নে,
فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا (3)
আর যারা স্মারকগ্রন্থ পাঠ করে!
إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ (4)
নিঃসন্দেহ তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন,
رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ (5)
যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এদের উভয়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রভু, আর যিনি উদয়স্থল সমূহেরও প্রভু,
إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ (6)
নিঃসন্দেহ আমরা নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির শোভা দিয়ে সুশোভিত করেছি, --
وَحِفْظًا مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ مَارِدٍ (7)
আর প্রতিরক্ষা প্রত্যেক বিদ্রোহাচারী শয়তান থেকে।
لَا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ (8)
তারা কান পাততে পারে না ঊর্ধ্ব এলাকার দিকে, আর তাদের প্রতি নিক্ষেপ করা হয় সব দিক থেকে, --
دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ (9)
বিতাড়িত, আর তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন শাস্তি, --
إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ (10)
সে ব্যতীত যে ছিনিয়ে নেয় একটুকুন ছিনতাই, কিন্তু তাকে অনুসরণ করে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।
فَاسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمْ مَنْ خَلَقْنَا ۚ إِنَّا خَلَقْنَاهُمْ مِنْ طِينٍ لَازِبٍ (11)
সুতরাং তাদের জিজ্ঞাসা করো, -- গঠনে তারা কি বেশী বলিষ্ঠ না যাদের আমরা সৃষ্টি করেছি? নিঃসন্দেহ তাদের আমরা সৃষ্টি করেছি আঠালো কাদা থেকে।
بَلْ عَجِبْتَ وَيَسْخَرُونَ (12)
বস্তুতঃ তুমি তো তাজ্জব হচ্ছো, আর তারা করছে মস্করা।
وَإِذَا ذُكِّرُوا لَا يَذْكُرُونَ (13)
আর যখন তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তারা মনোযোগ দেয় না,
وَإِذَا رَأَوْا آيَةً يَسْتَسْخِرُونَ (14)
আর যখন তারা কোনো নিদর্শন দেখতে পায় তারা ঠাট্টাবিদ্রূপ করে,
وَقَالُوا إِنْ هَٰذَا إِلَّا سِحْرٌ مُبِينٌ (15)
আর বলে -- ''এটি স্পষ্ট জাদু বৈ তো নয়’’,
أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ (16)
''কী! যখন আমরা মারা যাব এবং ধূলোমাটি ও হাড়গোড় হয়ে যাব তখন কি আমরা ঠিকঠিকই পুনরুত্থিত হব?’’
أَوَآبَاؤُنَا الْأَوَّلُونَ (17)
''আর কি পুরাকালের আমাদের পিতৃপুরুষরাও?’’
قُلْ نَعَمْ وَأَنْتُمْ دَاخِرُونَ (18)
তুমি বলো -- ''হাঁ, আর তোমরা লাঞ্ছিত হবে।’’
فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ فَإِذَا هُمْ يَنْظُرُونَ (19)
তখন সেটি কিন্তু একটিমাত্র মহাগর্জন হবে, তখন দেখো! তারা চেয়ে থাকবে।
وَقَالُوا يَا وَيْلَنَا هَٰذَا يَوْمُ الدِّينِ (20)
আর তারা বলবে -- ''হায় ধিক্, আমাদের! এটিই তো বিচারের দিন!’’
هَٰذَا يَوْمُ الْفَصْلِ الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تُكَذِّبُونَ (21)
''এইটিই ফয়সালা করার দিন যেটি সন্বন্ধে তোমরা মিথ্যা আখ্যা দিতে।’’
۞ احْشُرُوا الَّذِينَ ظَلَمُوا وَأَزْوَاجَهُمْ وَمَا كَانُوا يَعْبُدُونَ (22)
''যারা অনাচার করেছিল তাদের একত্র করো, আর তাদের সহচরদের, আর তাদেরও যাদের তারা উপাসনা করত --
مِنْ دُونِ اللَّهِ فَاهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَاطِ الْجَحِيمِ (23)
''আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে, তারপর তাদের পরিচালিত করো দুযখের পথে।
وَقِفُوهُمْ ۖ إِنَّهُمْ مَسْئُولُونَ (24)
''আর তাদের থামাও, তারা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে,
مَا لَكُمْ لَا تَنَاصَرُونَ (25)
''তোমাদের কি হল, তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করছ না?’’
بَلْ هُمُ الْيَوْمَ مُسْتَسْلِمُونَ (26)
বস্তুতঃ সেদিন তারা আত্মসমর্পিত হবে।
وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ (27)
আর তাদের কেউ কেউ অন্যদের দিকে এগিয়ে যাবে পরস্পরকে প্রশ্ন করে --
قَالُوا إِنَّكُمْ كُنْتُمْ تَأْتُونَنَا عَنِ الْيَمِينِ (28)
তারা বলবে -- ''তোমরাই তো নিশ্চয়ই আমাদের কাছে আসতে ডান দিকে থেকে।’’
قَالُوا بَلْ لَمْ تَكُونُوا مُؤْمِنِينَ (29)
তারা বলবে -- ''না, তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না,
وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيْكُمْ مِنْ سُلْطَانٍ ۖ بَلْ كُنْتُمْ قَوْمًا طَاغِينَ (30)
''আর তোমাদের উপরে আমাদের কোনো আধিপত্য ছিল না, বরং তোমরাই ছিলে উচ্ছৃঙ্খল লোক।
فَحَقَّ عَلَيْنَا قَوْلُ رَبِّنَا ۖ إِنَّا لَذَائِقُونَ (31)
''সেজন্যে আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রভুর বাণী সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই আস্বাদন করতে যাচ্ছি।
فَأَغْوَيْنَاكُمْ إِنَّا كُنَّا غَاوِينَ (32)
''বস্তুত আমরা তোমাদের বিপথে নিয়েছিলাম, কেননা আমরা নিজেরাই বিপথগামী ছিলাম।’’
فَإِنَّهُمْ يَوْمَئِذٍ فِي الْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ (33)
সুতরাং সেইদিন তারা নিশ্চয়ই শাস্তিতে একে অন্যের শরিক হবে।
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِالْمُجْرِمِينَ (34)
নিঃসন্দেহ এইরূপই আমরা অপরাধীদের প্রতি করে থাকি।
إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ (35)
নিঃসন্দেহ যখন তাদের বলা হতো -- 'আল্লাহ্ ছাড়া অন্য উপাস্য নেই’, তখন তারা হামবড়াই করত,
وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُو آلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَجْنُونٍ (36)
আর তারা বলত -- ''কী! আমরা কি আমাদের উপাস্যদের সত্যিই ত্যাগ করব একজন পাগলা কবির কারণে?’’
بَلْ جَاءَ بِالْحَقِّ وَصَدَّقَ الْمُرْسَلِينَ (37)
বস্তুত তিনি সত্য নিয়ে এসেছেন, আর রসূলগণকে তিনি সত্য প্রতিপন্ন করেছেন।
إِنَّكُمْ لَذَائِقُو الْعَذَابِ الْأَلِيمِ (38)
তোমরা নিশ্চয়ই মর্মন্তুদ শাস্তি আস্বাদন করতেই যাচ্ছ,
وَمَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ (39)
আর তোমাদের প্রতিদান দেওয়া হবে না তোমরা যা করতে তা ব্যতীত, --
إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ (40)
আল্লাহ্র নিষ্ঠাবান বান্দারা ব্যতীত।
أُولَٰئِكَ لَهُمْ رِزْقٌ مَعْلُومٌ (41)
এরাই -- এদের জন্য রয়েছে সুপরিচিত রিযেক,
فَوَاكِهُ ۖ وَهُمْ مُكْرَمُونَ (42)
ফলমূল, আর তারা হবে সম্মানিত --
فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ (43)
আনন্দময় উদ্যানে,
عَلَىٰ سُرُرٍ مُتَقَابِلِينَ (44)
তখতের উপরে মুখোমুখি হয়ে রইবে।
يُطَافُ عَلَيْهِمْ بِكَأْسٍ مِنْ مَعِينٍ (45)
তাদের কাছে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে নির্মল ফোয়ারা থেকে এক শরবতের পাত্র, --
بَيْضَاءَ لَذَّةٍ لِلشَّارِبِينَ (46)
সাদা সুস্বাদু পানকারীদের জন্য।
لَا فِيهَا غَوْلٌ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنْزَفُونَ (47)
এতে মাথাব্যথা নেই, আর তারা এ থেকে মাতালও হবে না।
وَعِنْدَهُمْ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ عِينٌ (48)
আর তাদের কাছে থাকবে সলাজ-নম্র আয়তলোচন, --
كَأَنَّهُنَّ بَيْضٌ مَكْنُونٌ (49)
যেন তারা সুরক্ষিত ডিম।
فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ (50)
তখন তাদের কেউ কেউ অন্যদের দিকে এগিয়ে যাবে পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
قَالَ قَائِلٌ مِنْهُمْ إِنِّي كَانَ لِي قَرِينٌ (51)
তাদের মধ্যে কোনো এক বক্তা বলবে -- ''আমার অবশ্য এক বন্ধু ছিল,
يَقُولُ أَإِنَّكَ لَمِنَ الْمُصَدِّقِينَ (52)
''সে বলত, 'তুমি কি নিশ্চয়ই সমর্থনকারীদের মধ্যেকার?
أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَدِينُونَ (53)
''কী! যখন আমরা মরে যাব এবং ধূলোমাটি ও হাড়গোড় হয়ে যাব, তখন কি আমরা ঠিকঠিকই প্রতিফল ভোগ করব’?’’
قَالَ هَلْ أَنْتُمْ مُطَّلِعُونَ (54)
সে বলবে -- ''তোমরা কি উঁকি দিয়ে দেখবে?’’
فَاطَّلَعَ فَرَآهُ فِي سَوَاءِ الْجَحِيمِ (55)
তখন সে উঁকি দেবে আর ওকে দুযখের কেন্দ্রস্থলে দেখতে পাবে।
قَالَ تَاللَّهِ إِنْ كِدْتَ لَتُرْدِينِ (56)
সে বলবে -- ''আল্লাহ্র কসম! তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংস করেছিলে,
وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّي لَكُنْتُ مِنَ الْمُحْضَرِينَ (57)
''আর আমার প্রভুর অনুগ্রহ যদি না থাকত তবে আমিও নিশ্চয় উপস্থিতদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’’
أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ (58)
''তবে কি আমরা মরতে যাচ্ছি না, --
إِلَّا مَوْتَتَنَا الْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ (59)
''আমাদের প্রথমবারের মৃত্যু ব্যতীত, আর আমরা শাস্তি পেতে যাচ্ছি না।
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ (60)
''নিশ্চয়ই এই -- এটিই তো মহাসাফল্য!’’
لِمِثْلِ هَٰذَا فَلْيَعْمَلِ الْعَامِلُونَ (61)
এর অনুরূপ অবস্থার জন্য তবে কর্মীরা কাজ করে যাক।
أَذَٰلِكَ خَيْرٌ نُزُلًا أَمْ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ (62)
এইটিই অধিক ভাল আপ্যায়ন, না যাক্কুম গাছ?
إِنَّا جَعَلْنَاهَا فِتْنَةً لِلظَّالِمِينَ (63)
নিঃসন্দেহ আমরা এটিকে সৃষ্টি করেছি দুরাচারীদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ।
إِنَّهَا شَجَرَةٌ تَخْرُجُ فِي أَصْلِ الْجَحِيمِ (64)
নিঃসন্দেহ এটি এমন এক গাছ যা দুযখের তলায় --
طَلْعُهَا كَأَنَّهُ رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ (65)
এর ফলফসল যেন শয়তানদের মুন্ডু।
فَإِنَّهُمْ لَآكِلُونَ مِنْهَا فَمَالِئُونَ مِنْهَا الْبُطُونَ (66)
তারা তখন নিশ্চয় এ থেকে আহার করবে আর এর দ্বারা পেট ভর্তি করবে।
ثُمَّ إِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًا مِنْ حَمِيمٍ (67)
তারপর অবশ্য তাদের জন্য এর উপরে থাকবে ফুটন্ত জলের পানীয়।
ثُمَّ إِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَإِلَى الْجَحِيمِ (68)
তারপর নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল হবে ভয়ঙ্কর আগুনের প্রতি।
إِنَّهُمْ أَلْفَوْا آبَاءَهُمْ ضَالِّينَ (69)
তারা আলবৎ তাদের পিতৃপুরুষদের পথভ্রষ্টরূপেই পেয়েছিল,
فَهُمْ عَلَىٰ آثَارِهِمْ يُهْرَعُونَ (70)
তাই তারা তাদের পদচিহ্নের অন্ধ অনুসরণ করেছিল,
وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الْأَوَّلِينَ (71)
আর তাদের আগে অধিকাংশ পূর্ববর্তীরা বিপথে গিয়েছিল,
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِمْ مُنْذِرِينَ (72)
অথচ আমরা তাদের মধ্যে ইতিপূর্বে সতর্ককারীদের পাঠিয়েছিলাম,
فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنْذَرِينَ (73)
সুতরাং চেয়ে দেখো কেমন হয়েছিল সতর্কীকৃতদের পরিণাম,
إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ (74)
শুধু আল্লাহ্র খাস বান্দাদের ব্যতীত।
وَلَقَدْ نَادَانَا نُوحٌ فَلَنِعْمَ الْمُجِيبُونَ (75)
আর ইতিপূর্বে অবশ্য নূহ আমাদের আহ্বান করেছিলেন, আর আমরা কত উত্তম উত্তরদাতা।
وَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ (76)
আর আমরা তাঁকে ও তাঁর পরিজনকে ভীষণ সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম,
وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُ هُمُ الْبَاقِينَ (77)
আর তাঁর সন্তান-সন্ততিকে আমরা বানিয়েছিলাম প্রকৃত টিকে থাকা দল,
وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ (78)
আর তাঁর জন্য পরবর্তীদের মধ্যে আমরা রেখেছিলাম --
سَلَامٌ عَلَىٰ نُوحٍ فِي الْعَالَمِينَ (79)
সমগ্র বিশ্বজগতের মধ্যে নূহের প্রতি সালাম!
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ (80)
নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।
إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ (81)
তিনি অবশ্যই আমাদের বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
ثُمَّ أَغْرَقْنَا الْآخَرِينَ (82)
আর আমরা অন্যান্যদের ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।
۞ وَإِنَّ مِنْ شِيعَتِهِ لَإِبْرَاهِيمَ (83)
আর নিশ্চয়ই তাঁর পশ্চাদবর্তীদের মধ্যে ছিলেন ইব্রাহীম।
إِذْ جَاءَ رَبَّهُ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ (84)
স্মরণ কর! তিনি তাঁর প্রভুর কাছে এসেছিলেন বিশুদ্ধ চিত্ত নিয়ে, --
إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَاذَا تَعْبُدُونَ (85)
যখন তাঁর পিতৃপুরুষকে ও তাঁর স্বজাতিকে তিনি বলেছিলেন -- ''তোমরা কিসের উপাসনা করছ?
أَئِفْكًا آلِهَةً دُونَ اللَّهِ تُرِيدُونَ (86)
''তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে কি এক মিথ্যা উপাস্যকেই কামনা কর?
فَمَا ظَنُّكُمْ بِرَبِّ الْعَالَمِينَ (87)
''তাহলে বিশ্বজগতের প্রভু সন্বন্ধে কী তোমাদের ধারণা?’’
فَنَظَرَ نَظْرَةً فِي النُّجُومِ (88)
তারপর তারকারাজির দিকে তিনি একনজর তাকালেন,
فَقَالَ إِنِّي سَقِيمٌ (89)
তখন তিনি বললেন -- ''আমি যারপর নাই বিরক্ত!’’
فَتَوَلَّوْا عَنْهُ مُدْبِرِينَ (90)
সুতরাং তারা তাঁর কাছ থেকে বিমুখ হয়ে ফিরে গেল।
فَرَاغَ إِلَىٰ آلِهَتِهِمْ فَقَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ (91)
তারপর তিনি তাদের উপাস্যদের কাছে ফিরে গেলেন এবং বললেন -- ''তোমরা খাও না কেন?
مَا لَكُمْ لَا تَنْطِقُونَ (92)
''তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা কথা বলছ না?’’
فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًا بِالْيَمِينِ (93)
কাজেই তিনি তাদের উপরে লাফিয়ে পড়লেন ডানহাতে আঘাত করে।
فَأَقْبَلُوا إِلَيْهِ يَزِفُّونَ (94)
তখন তারা তাঁর দিকে ছুটে এল হতবুদ্ধি হয়ে।
قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ (95)
তিনি বললেন -- ''তোমরা কি তার উপাসনা কর যা তোমরা কেটে বানাও,
وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ (96)
''অথচ আল্লাহ্ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন আর তোমরা যা তৈরি কর তাও?’’
قَالُوا ابْنُوا لَهُ بُنْيَانًا فَأَلْقُوهُ فِي الْجَحِيمِ (97)
তারা বললে -- ''এর জন্য এক কাঠামো তৈরি কর, তারপর তাকে নিক্ষেপ কর সেই ভয়ঙ্কর আগুনে।’’
فَأَرَادُوا بِهِ كَيْدًا فَجَعَلْنَاهُمُ الْأَسْفَلِينَ (98)
কাজেই তারা তাঁর বিরুদ্ধে এক চক্রান্ত ফাঁদলো, কিন্তু আমরা তাদের হীন বানিয়ে দিলাম।
وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهْدِينِ (99)
আর তিনি বললেন -- ''আমি নিশ্চয়ই আমার প্রভুর দিকে যাত্রাকারী, তিনি আমাকে অচিরেই পরিচালিত করবেন।’’
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ (100)
''আমার প্রভু! আমার জন্য সৎকর্মীদের থেকে দান করো।’’
فَبَشَّرْنَاهُ بِغُلَامٍ حَلِيمٍ (101)
সেজন্য আমরা তাঁকে সুসংবাদ দিলাম এক অমায়িক পুত্রসন্তানের।
فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَىٰ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانْظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَا أَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِي إِنْ شَاءَ اللَّهُ مِنَ الصَّابِرِينَ (102)
তারপর যখন সে তাঁর সঙ্গে কাজ করার যোগ্যতায় উপনীত হল তখন তিনি বললেন -- ''হে আমার পুত্রধন! নিঃসন্দেহ আমি স্বপ্নে দেখলাম যে আমি তোমাকে কুরবানি করছি, অতএব ভেবে দেখো -- কী তুমি দেখছো ।’’ তিনি বললেন -- ''হে আমার আব্বা! আপনি তাই করুন যা আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। ইন-শা-আল্লাহ্ আপনি এখনি আমাকে পাবেন অধ্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত।
فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِ (103)
সুতরাং তাঁরা উভয়ে যখন আত্মসমর্পণ করলেন এবং তিনি তাঁকে ভূপাতিত করলেন কপালের জন্য,
وَنَادَيْنَاهُ أَنْ يَا إِبْرَاهِيمُ (104)
তখনই আমরা তাঁকে ডেকে বললাম -- ''হে ইব্রাহীম!
قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا ۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ (105)
''তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ الْبَلَاءُ الْمُبِينُ (106)
''নিশ্চয়ই এটি -- এইটিই তো ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা।’’
وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ (107)
আর আমরা তাঁকে বদলা দিয়েছিলাম এক মহান কুরবানি।
وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ (108)
আর আমরা তাঁর জন্য পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --
سَلَامٌ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ (109)
ইব্রাহীমের প্রতি ''সালাম’’।
كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ (110)
এইভাবেই আমরা প্রতিদান দিই সৎকর্মশীলদের।
إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ (111)
নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের মধ্যেকার।
وَبَشَّرْنَاهُ بِإِسْحَاقَ نَبِيًّا مِنَ الصَّالِحِينَ (112)
আর আমরা তাঁকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের -- একজন নবী সৎপথাবলন্বীদের মধ্যেকার।
وَبَارَكْنَا عَلَيْهِ وَعَلَىٰ إِسْحَاقَ ۚ وَمِنْ ذُرِّيَّتِهِمَا مُحْسِنٌ وَظَالِمٌ لِنَفْسِهِ مُبِينٌ (113)
আর আমরা আশীর্বাদ বর্ষণ করেছিলাম তাঁর উপরে ও ইসহাকের উপরে। আর তাঁদের দুজনের বংশধরদের মধ্যে থেকে কেউ হচ্ছেন সৎকর্মশীল, আর কেউ হচ্ছে তাদের নিজেদের প্রতি স্পষ্টভাবে অন্যায়াচারী।
وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَارُونَ (114)
আর নিশ্চয় আমরা মূসা ও হারূনের প্রতি অনুগ্রহ করেই ছিলাম,
وَنَجَّيْنَاهُمَا وَقَوْمَهُمَا مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ (115)
আর তাঁদের দুজনকে ও তাঁদের লোকদলকে আমরা ভীষণ সংকট থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
وَنَصَرْنَاهُمْ فَكَانُوا هُمُ الْغَالِبِينَ (116)
আর আমরা তাঁদের সাহায্য করেছিলাম, সেজন্য তাঁরা খোদ বিজয়ী হয়েছিলেন।
وَآتَيْنَاهُمَا الْكِتَابَ الْمُسْتَبِينَ (117)
আর তাঁদের উভয়কে আমরা দিয়েছিলাম এক স্পষ্ট গ্রন্থ,
وَهَدَيْنَاهُمَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (118)
আর তাঁদের উভয়কে আমরা পরিচালিত করেছিলাম সরল-সঠিক পথে,
وَتَرَكْنَا عَلَيْهِمَا فِي الْآخِرِينَ (119)
আর তাদের জন্য আমরা পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --
سَلَامٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَارُونَ (120)
মূসা ও হারূনের প্রতি ''সালাম’’।
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ (121)
এইভাবেই আমরা অবশ্য প্রতিদান দিই সৎকর্মশীলদের।
إِنَّهُمَا مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ (122)
নিশ্চয় তাঁরা ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের মধ্যেকার।
وَإِنَّ إِلْيَاسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ (123)
আর নিশ্চয়ই ইল্য়াস রসূলগণের মধ্যেকার ছিলেন।
إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَلَا تَتَّقُونَ (124)
স্মরণ করো, তিনি তাঁর স্বজাতিকে বলেছিলেন -- ''তোমরা কি ধর্মভীরুতা অবলন্বন করবে না?
أَتَدْعُونَ بَعْلًا وَتَذَرُونَ أَحْسَنَ الْخَالِقِينَ (125)
''তোমরা কি বা’লকে ডাকবে, আর পরিত্যাগ করবে সৃষ্টিকর্তাদের সর্বশ্রেষ্ঠজনকে,
اللَّهَ رَبَّكُمْ وَرَبَّ آبَائِكُمُ الْأَوَّلِينَ (126)
আল্লাহ্কে -- তোমাদের প্রভু এবং পূর্বকালীন তোমাদের পিতৃপুরুষদেরও প্রভু?’’
فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ (127)
কিন্তু তারা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করল, সেজন্য তাদের নিশ্চয়ই হাজির করা হবে,
إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ (128)
শুধু আল্লাহ্র একনিষ্ঠ বান্দাদের ব্যতীত।
وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ (129)
আর তাঁর জন্য আমরা পরবর্তীদের মধ্যে রেখেছিলাম --
سَلَامٌ عَلَىٰ إِلْ يَاسِينَ إِلْ يَاسِينَ (130)
ইল্য়াসীনের উপরে ''সালাম’’।
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ (131)
নিঃসন্দেহ এইভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।
إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ (132)
তিনি নিশ্চয়ই ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের অন্যতম।
وَإِنَّ لُوطًا لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ (133)
আর অবশ্যই লূত ছিলেন রসূলগণের মধ্যেকার।
إِذْ نَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ أَجْمَعِينَ (134)
স্মরণ কর! তাঁকে ও তাঁর পরিজনকে উদ্ধার করেছিলাম, সব ক’জনকেই --
إِلَّا عَجُوزًا فِي الْغَابِرِينَ (135)
এক বৃদ্ধাকে ব্যতীত, যে ছিল পেছনে রয়ে যাওয়া দলের।
ثُمَّ دَمَّرْنَا الْآخَرِينَ (136)
তারপর আমরা অবশিষ্টদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।
وَإِنَّكُمْ لَتَمُرُّونَ عَلَيْهِمْ مُصْبِحِينَ (137)
আর নিঃসন্দেহ তোমরা তো তাদের অতিক্রম করে থাক সকালবেলায়,
وَبِاللَّيْلِ ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ (138)
এবং রাত্রিকালে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না।
وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ (139)
আর নিশ্চয়ই ইউনুস ছিলেন রসূলগণের অন্যতম।
إِذْ أَبَقَ إِلَى الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ (140)
স্মরণ করো! তিনি বোঝাই করা জাহাজে গিয়ে উঠেছিলেন।
فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ الْمُدْحَضِينَ (141)
তাই তিনি লটারী খেলেছিলেন, কিন্তু তিনিই হয়ে গেলেন নিক্ষিপ্তদের একজন।
فَالْتَقَمَهُ الْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌ (142)
তখন একটি মাছ তাঁকে মুখে তুলে নিল, যদিও তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
فَلَوْلَا أَنَّهُ كَانَ مِنَ الْمُسَبِّحِينَ (143)
আর তিনি যদি মহিমা জপতপে রত না থাকতেন --
لَلَبِثَ فِي بَطْنِهِ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ (144)
তাহলে তিনি তার পেটে রয়ে যেতেন পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত।
۞ فَنَبَذْنَاهُ بِالْعَرَاءِ وَهُوَ سَقِيمٌ (145)
তারপর আমরা তাঁকে এক বৃক্ষলতা শূন্য উপকূলে ফেলে দিলাম, আর তিনি ছিলেন অসুস্থ।
وَأَنْبَتْنَا عَلَيْهِ شَجَرَةً مِنْ يَقْطِينٍ (146)
তখন তাঁর উপরে আমরা জন্মিয়েছিলাম লাউজাতীয় গাছ,
وَأَرْسَلْنَاهُ إِلَىٰ مِائَةِ أَلْفٍ أَوْ يَزِيدُونَ (147)
আর আমরা তাঁকে পাঠিয়েছিলাম এক লাখ বা আরো বেশী লোকের কাছে,
فَآمَنُوا فَمَتَّعْنَاهُمْ إِلَىٰ حِينٍ (148)
তখন তারা বিশ্বাস করেছিল, সেজন্য আমরা তাদের উপভোগ করতে দিয়েছিলাম কিছুকালের জন্য।
فَاسْتَفْتِهِمْ أَلِرَبِّكَ الْبَنَاتُ وَلَهُمُ الْبَنُونَ (149)
সুতরাং তাদের জিজ্ঞাসা করো -- তোমার প্রভুর জন্য কি কন্যাসন্তান রয়েছে, আর তাদের জন্য পুত্রসন্তান?
أَمْ خَلَقْنَا الْمَلَائِكَةَ إِنَاثًا وَهُمْ شَاهِدُونَ (150)
অথবা, আমরা কি ফিরিশ্তাদের নারীরূপে সৃষ্টি করেছিলাম, আর তারা সাক্ষী ছিল?
أَلَا إِنَّهُمْ مِنْ إِفْكِهِمْ لَيَقُولُونَ (151)
এটি কি নয় যে তারা আলবৎ তাদের মিথ্যা থেকেই তো কথা বলছে, --
وَلَدَ اللَّهُ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ (152)
আল্লাহ্ জন্ম দিয়েছিলেন? আর তারা তো নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।
أَصْطَفَى الْبَنَاتِ عَلَى الْبَنِينَ (153)
তিনি কি কন্যাদের পছন্দ করেছেন পুত্রদের পরিবর্তে?
مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ (154)
তোমাদের কি হয়েছে? কিভাবে তোমরা বিচার করো?
أَفَلَا تَذَكَّرُونَ (155)
তোমরা কি তবে মনোযোগ দেবে না?
أَمْ لَكُمْ سُلْطَانٌ مُبِينٌ (156)
নাকি তোমাদের কাছে কোনো স্পষ্ট দলিল-প্রমাণ রয়েছে?
فَأْتُوا بِكِتَابِكُمْ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ (157)
তেমন হলে তোমাদের গ্রন্থ নিয়ে এস, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
وَجَعَلُوا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ (158)
আর তারা তাঁর মধ্যে ও জিনদের মধ্যে একটা সম্পর্ক দাঁড় করিয়েছে। আর জিনরা তো জেনেই ফেলেছে যে তাদের অবশ্যই উপস্থাপিত করা হবে।
سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ (159)
আল্লাহ্রই সব মহিমা! তারা যা আরোপ করে তা থেকে বহু ঊর্ধ্বে, --
إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ (160)
আল্লাহ্র নিষ্ঠাবান বান্দারা ব্যতীত।
فَإِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ (161)
অতএব নিশ্চয়ই তোমরা ও যাদের তোমরা উপাসনা কর তারা --
مَا أَنْتُمْ عَلَيْهِ بِفَاتِنِينَ (162)
তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তকারী হতে পারবে না, --
إِلَّا مَنْ هُوَ صَالِ الْجَحِيمِ (163)
তাকে ব্যতীত যে জ্বলন্ত আগুনে পুড়তে চায়।
وَمَا مِنَّا إِلَّا لَهُ مَقَامٌ مَعْلُومٌ (164)
আর ''আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার জন্যে নির্ধারিত আবাস নেই,
وَإِنَّا لَنَحْنُ الصَّافُّونَ (165)
''আর নিশ্চয়ই আমরা, আমরাই তো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াব,
وَإِنَّا لَنَحْنُ الْمُسَبِّحُونَ (166)
''আর অবশ্য আমরা, আলবৎ আমরা জপ করতে থাকব।’’
وَإِنْ كَانُوا لَيَقُولُونَ (167)
আর নিশ্চয়ই তারা বলতে থাকতো --
لَوْ أَنَّ عِنْدَنَا ذِكْرًا مِنَ الْأَوَّلِينَ (168)
''যদি আমাদের কাছে পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে কোনো স্মরণীয় গ্রন্থ থাকতো,
لَكُنَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ (169)
''তাহলে আমরা আল্লাহ্র নিষ্ঠাবান বান্দা হতে পারতাম।’’
فَكَفَرُوا بِهِ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ (170)
কিন্তু তারা এতে অবিশ্বাস পোষণ করে, কাজেই শীঘ্রই তারা জানতে পারবে।
وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا الْمُرْسَلِينَ (171)
আর অবশ্যই আমাদের বক্তব্য আমাদের বান্দাদের -- প্রেরিত পুরুষদের, জন্য সাব্যস্ত হয়েই গেছে, --
إِنَّهُمْ لَهُمُ الْمَنْصُورُونَ (172)
নিঃসন্দেহ তাঁরা -- তাঁরাই তো হবে সাহায্যপ্রাপ্ত,
وَإِنَّ جُنْدَنَا لَهُمُ الْغَالِبُونَ (173)
আর নিঃসন্দেহ আমাদের সেনাদল -- তারাই তো হবে বিজয়ী।
فَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ (174)
অতএব তাদের থেকে ফিরে থেকো কিছুকালের জন্য,
وَأَبْصِرْهُمْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ (175)
আর তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখো, কেননা তারাও শীঘ্রই দেখতে পাবে।
أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ (176)
তারা কি তবে আমাদের শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়?
فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمْ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ (177)
কিন্তু যখন তা তাদের আঙিনায় অবতরণ করবে তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হবে কত মন্দ!
وَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ (178)
আর তুমি তাদের থেকে ফিরে থেকো কিছুকালের জন্য,
وَأَبْصِرْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ (179)
আর লক্ষ্য রাখো, কেননা তারাও শীঘ্রই দেখতে পাবে।
سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ (180)
মহিমা কীর্তিত হোক তোমার প্রভুর -- পরম মর্যাদা সম্পন্ন প্রভুর, তারা যা-কিছু আরোপ করে তা থেকে বহু ঊর্ধ্বে।
وَسَلَامٌ عَلَى الْمُرْسَلِينَ (181)
আর 'সালাম’ প্রেরিতপুরুষদের উপরে।
وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (182)
আর সকল প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্য -- বিশ্বজগতের প্রভু!