وَالذَّارِيَاتِ ذَرْوًا (1)
ভাবো -- বিক্ষেপকারীদের বিক্ষেপের কথা, --
فَالْحَامِلَاتِ وِقْرًا (2)
তারপর বহনকারীদের বোঝার কথা, --
فَالْجَارِيَاتِ يُسْرًا (3)
তারপর চলমানদের স্বচ্ছন্দগমনের কথা, --
فَالْمُقَسِّمَاتِ أَمْرًا (4)
তারপর বিতরণকারীদের কাজকর্মের কথা, --
إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَصَادِقٌ (5)
নিঃসন্দেহ তোমাদের প্রতি যা ওয়াদা করা হয়েছিল তা অবশ্যই সত্য, --
وَإِنَّ الدِّينَ لَوَاقِعٌ (6)
আর নিঃসন্দেহ ন্যায়বিচার অবশ্যাম্ভাবী।
وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْحُبُكِ (7)
ভাবো আকাশের কথা -- অজস্র পথ বিশিষ্ট,
إِنَّكُمْ لَفِي قَوْلٍ مُخْتَلِفٍ (8)
তোমরা তো নিশ্চয়ই পরস্পর বিরোধী কথায় রয়েছ,
يُؤْفَكُ عَنْهُ مَنْ أُفِكَ (9)
যে মুখ ফিরিয়ে থাকে তাকে এ থেকে ফিরিয়েই রাখা হয়।
قُتِلَ الْخَرَّاصُونَ (10)
কোতল হোক মিথ্যারচনাকারীরা --
الَّذِينَ هُمْ فِي غَمْرَةٍ سَاهُونَ (11)
যারা খোদ গহবরে, বেখেয়াল!
يَسْأَلُونَ أَيَّانَ يَوْمُ الدِّينِ (12)
তারা জিজ্ঞাসা করে -- ''কবে আসবে বিচারের দিন?’’
يَوْمَ هُمْ عَلَى النَّارِ يُفْتَنُونَ (13)
সেই দিনটাতে আগুনে তাদের পরীক্ষা করা হবে।
ذُوقُوا فِتْنَتَكُمْ هَٰذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تَسْتَعْجِلُونَ (14)
''তোমাদের অত্যাচার তোমরা আস্বাদন কর। এইটিই সেই যেটি তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিল।’’
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ (15)
নিঃসন্দেহ ধর্মভীরুরা থাকবে স্বর্গোউদ্যানসমূহে ও ঝরনা-রাজিতে, --
آخِذِينَ مَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَٰلِكَ مُحْسِنِينَ (16)
তাদের প্রভু যা তাদের দেবেন তারা তা গ্রহণ করতে থাকবে। তারা এর আগে নিশ্চয়ই ছিল সৎকর্মশীল।
كَانُوا قَلِيلًا مِنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ (17)
তারা রাতের সামান্য সময়ই ঘুমিয়ে কাটাত।
وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ (18)
আর নিশিভোরে তারা পরিত্রাণ খুঁজত।
وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ (19)
আর তাদের ধনসম্পদের মধ্যে ভিখারীর জন্য ও বঞ্চিতের জন্য হক্ রেখেছে।
وَفِي الْأَرْضِ آيَاتٌ لِلْمُوقِنِينَ (20)
আর পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে নিশ্চিত-বিশ্বাসীদের জন্য, --
وَفِي أَنْفُسِكُمْ ۚ أَفَلَا تُبْصِرُونَ (21)
আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে। তবুও কি তোমরা চেয়ে দেখবে না?
وَفِي السَّمَاءِ رِزْقُكُمْ وَمَا تُوعَدُونَ (22)
আর আকাশে রয়েছে তোমাদের জীবিকা, আর যা তোমাদের ওয়াদা করা হয়েছে।
فَوَرَبِّ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ لَحَقٌّ مِثْلَ مَا أَنَّكُمْ تَنْطِقُونَ (23)
অতএব মহাকাশ ও পৃথিবীর প্রভুর শপথ -- নিঃসন্দেহ এ আলবৎ সত্য, যেমনটা তোমরা বস্তুত বাক্যালাপ কর।
هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ ضَيْفِ إِبْرَاهِيمَ الْمُكْرَمِينَ (24)
তোমার কাছে ইব্রাহীমের সম্মানিত অতিথিদের সংবাদ এসেছে কি?
إِذْ دَخَلُوا عَلَيْهِ فَقَالُوا سَلَامًا ۖ قَالَ سَلَامٌ قَوْمٌ مُنْكَرُونَ (25)
তারা যখন তাঁর দরবারে প্রবেশ করল তারা তখন বললে -- ''সালাম’’। তিনিও বললেন -- ''সালাম’’, অপরিচিত লোক।
فَرَاغَ إِلَىٰ أَهْلِهِ فَجَاءَ بِعِجْلٍ سَمِينٍ (26)
তিনি তখন তাঁর পরিবারের কাছে নীরবে ছুটলেন এবং একটি পুষ্ট বাছুর নিয়ে এলেন,
فَقَرَّبَهُ إِلَيْهِمْ قَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ (27)
তারপর তিনি এটি তাদের সামনে এগিয়ে দিলেন, তিনি বললেন -- ''আপনারা কি খাবেন না?’’
فَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةً ۖ قَالُوا لَا تَخَفْ ۖ وَبَشَّرُوهُ بِغُلَامٍ عَلِيمٍ (28)
সুতরাং তাদের সম্পর্কে তিনি ভয় অনুভব করলেন। তারা বললে -- ''ভয় করো না।’’ পক্ষান্তরে তারা তাঁকে সুসংবাদ দিল এক জ্ঞানবান ছেলের।
فَأَقْبَلَتِ امْرَأَتُهُ فِي صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَقَالَتْ عَجُوزٌ عَقِيمٌ (29)
তারপর তাঁর স্ত্রী এগিয়ে এলেন বিলাপ করতে-করতে, আর তিনি তাঁর গালে চাপড় মারছেন এবং বলছেন, ''এক বুড়ি, বন্ধ্যা!’’
قَالُوا كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ ۖ إِنَّهُ هُوَ الْحَكِيمُ الْعَلِيمُ (30)
তারা বললে -- ''এমনটাই হবে, তোমার প্রভু বলেছেন।’’ নিঃসন্দেহ তিনি স্বয়ং পরমজ্ঞানী, সর্বজ্ঞাতা।
۞ قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ (31)
তিনি বললেন -- ''তাহলে তোমাদের বিশেষ বার্তা কি, হে বার্তাবাহকগণ?’’
قَالُوا إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَىٰ قَوْمٍ مُجْرِمِينَ (32)
তারা বললে -- ''আমাদের অবশ্য প্রেরণ করা হয়েছে এক অপরাধী লোকদের প্রতি, --
لِنُرْسِلَ عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِنْ طِينٍ (33)
''যেন তাদের উপরে আমরা বর্ষণ করতে পারি মাটির পাথর,
مُسَوَّمَةً عِنْدَ رَبِّكَ لِلْمُسْرِفِينَ (34)
''যা অমিতাচারীদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে তোমার প্রভুর কাছে।’’
فَأَخْرَجْنَا مَنْ كَانَ فِيهَا مِنَ الْمُؤْمِنِينَ (35)
তারপর মুমিনদের মধ্যের যারা সেখানে রয়েছিল তাদের আমরা বের করে আনলাম,
فَمَا وَجَدْنَا فِيهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ (36)
কিন্ত আমরা সেখানে মুসলিমদের একটি পরিবার ব্যতীত আর কাউকে পাইনি।
وَتَرَكْنَا فِيهَا آيَةً لِلَّذِينَ يَخَافُونَ الْعَذَابَ الْأَلِيمَ (37)
আর আমরা সেখানে রেখে দিয়েছিলাম এক নিদর্শন তাদের জন্য যারা মর্মন্তুদ শাস্তিকে ভয় করে।
وَفِي مُوسَىٰ إِذْ أَرْسَلْنَاهُ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ بِسُلْطَانٍ مُبِينٍ (38)
আর মূসার মধ্যেও। দেখো! আমরা তাঁকে পাঠিয়েছিলাম ফিরআউনের কাছে সুস্পষ্ট কর্তৃত্ব দিয়ে।
فَتَوَلَّىٰ بِرُكْنِهِ وَقَالَ سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ (39)
কিন্ত সে ফিরে গিয়েছিল তার শক্তিমত্তার দিকে এবং বলেছিল -- ''একজন জাদুকর অথবা একজন পাগল।’’
فَأَخَذْنَاهُ وَجُنُودَهُ فَنَبَذْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ وَهُوَ مُلِيمٌ (40)
তখন আমরা তাকে ও তার দলবলকে পাকড়াও করলাম এবং তাদের নিক্ষেপ করলাম অথৈ জলে, আর সে ছিল দোষী।
وَفِي عَادٍ إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الرِّيحَ الْعَقِيمَ (41)
আর 'আদ জাতির ক্ষেত্রেও। দেখো! আমরা তাদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলাম এক বিধ্বংসী ঝড়।
مَا تَذَرُ مِنْ شَيْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا جَعَلَتْهُ كَالرَّمِيمِ (42)
এ যার উপরে এসে পড়েছিল তার কোনো কিছুই রেখে যায় নি, এটিকে তা করে দিয়েছিল ছাইয়ের মতো।
وَفِي ثَمُودَ إِذْ قِيلَ لَهُمْ تَمَتَّعُوا حَتَّىٰ حِينٍ (43)
আর ছামুদ-জাতির ক্ষেত্রেও। দেখো! তাদের বলা হয়েছিল -- ''কিছুকাল উপভোগ করে নাও।’’
فَعَتَوْا عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ فَأَخَذَتْهُمُ الصَّاعِقَةُ وَهُمْ يَنْظُرُونَ (44)
তথাপি তাদের প্রভুর আদেশের বিরুদ্ধে তারা দাঁড়িয়েছিল, ফলে এক বজ্রনাদ তাদের পাকড়ালো, আর তারা তাকিয়ে রয়েছিল।
فَمَا اسْتَطَاعُوا مِنْ قِيَامٍ وَمَا كَانُوا مُنْتَصِرِينَ (45)
তাদের আর দাঁড়াবার ক্ষমতা রইল না, আর তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হতেও পারে নি।
وَقَوْمَ نُوحٍ مِنْ قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا قَوْمًا فَاسِقِينَ (46)
আর পূর্বকালীন নূহের লোকদলকেও। নিঃসন্দেহ তারা ছিল সত্যত্যাগী জাতি।
وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ (47)
আর মহাকাশমন্ডল -- আমরা তা নির্মাণ করেছি হাতে, আর আমরাই বিশালতার নির্মাতা।
وَالْأَرْضَ فَرَشْنَاهَا فَنِعْمَ الْمَاهِدُونَ (48)
আর পৃথিবী -- আমরা একে বিছিয়ে দিয়েছি, কাজেই কত সুন্দর এই বিস্তারকারী!
وَمِنْ كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ (49)
আর প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে আমরা জোড়া-জোড়া সৃষ্টি করেছি, যেন তোমরা মনোনিবেশ করো।
فَفِرُّوا إِلَى اللَّهِ ۖ إِنِّي لَكُمْ مِنْهُ نَذِيرٌ مُبِينٌ (50)
''অতএব তোমরা বেগে আল্লাহ্র দিকে ছুটো। আমি নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তাঁর কাছ থেকে একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
وَلَا تَجْعَلُوا مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ ۖ إِنِّي لَكُمْ مِنْهُ نَذِيرٌ مُبِينٌ (51)
''আর আল্লাহ্র সাথে অন্য কোনো উপাস্য দাঁড় করো না। নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের নিকট তাঁর কাছ থেকে এক জন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’’
كَذَٰلِكَ مَا أَتَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِنْ رَسُولٍ إِلَّا قَالُوا سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ (52)
এইভাবেই। এদের আগে যারা ছিল তাদের কাছে এমন কোনো রসূল আসেন নি যাঁকে তারা না বলেছিল -- ''একজন জাদুকর, না হয় একজন পাগল।’’
أَتَوَاصَوْا بِهِ ۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ (53)
এরা কি এটিকেই মৌরুসি বিষয় বানিয়েছে? না, তারা হচ্ছে সীমালংঘনকারী জাতি।
فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَا أَنْتَ بِمَلُومٍ (54)
অতএব তাদের থেকে তুমি মুখ ফিরিয়ে নাও, কেননা তুমি তো দোষী নও।
وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَىٰ تَنْفَعُ الْمُؤْمِنِينَ (55)
তবুও তুমি উপদেশ দিতে থাকো, কেননা নিঃসন্দেহ উপদেশদান মুমিনদের উপকার করবে।
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (56)
আর আমি জিন ও মানুষকে, তারা আমাকে উপাসনা করুক -- এইজন্য ছাড়া সৃষ্টি করি নি।
مَا أُرِيدُ مِنْهُمْ مِنْ رِزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَنْ يُطْعِمُونِ (57)
আমি তাদের থেকে কোনো জীবিকা চাই না, আর আমি চাই না যে তারা আমাকে খাওয়াবে।
إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ (58)
বরঞ্চ আল্লাহ -- তিনিই বিরাট রিযেকদাতা, ক্ষমতার অধিকারী, শক্তিমান।
فَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذَنُوبًا مِثْلَ ذَنُوبِ أَصْحَابِهِمْ فَلَا يَسْتَعْجِلُونِ (59)
সুতরাং যারা অন্যায়াচরণ করেছে তাদের জন্য অবশ্যই রয়েছে এক ঝুড়ি তাদের সাঙ্গোপাঙ্গদের ঝুড়ির ন্যায়, সেজন্য তারা যেন আমার কাছে তড়িঘড়ি না করে।
فَوَيْلٌ لِلَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ يَوْمِهِمُ الَّذِي يُوعَدُونَ (60)
অতএব ধিক্ তাদের জন্য যারা অবিশ্বাস পোষণ করে -- তাদের সেই দিনটির কারণে যেটি তাদের ওয়াদা করা হয়েছে!