وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ (1)

ভাবো তারকার কথা, যখন তা অস্ত যায়!

مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ (2)

তোমাদের সঙ্গী দোষ-ত্রুটি করেন না, আর তিনি বিপথেও যান না,

وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ (3)

আর তিনি ইচ্ছামত কোনো কথা বলেন না।

إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ (4)

এইখানা প্রত্যাদিষ্ট হওয়া প্রত্যাদেশবাণী বৈ তো নয়, --

عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ (5)

তাঁকে শিখিয়েছেন বিরাট শক্তিমান --

ذُو مِرَّةٍ فَاسْتَوَىٰ (6)

বলবীর্যের অধিকারী। কাজেই তিনি পরিপূর্ণতায় পৌঁছলেন।

وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَىٰ (7)

আর তিনি রয়েছেন ঊর্ধ্ব দিগন্তে।

ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ (8)

তারপর তিনি সন্নিকটে এলেন, অতঃপর তিনি অবনত করলেন,

فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ (9)

তখন তিনি দুই ধনুকের ব্যবধানে রইলেন, অথবা আরও কাছে।

فَأَوْحَىٰ إِلَىٰ عَبْدِهِ مَا أَوْحَىٰ (10)

তখন তিনি তাঁর বান্দার কাছে প্রত্যাদেশ করলেন যা তিনি প্রত্যাদেশ করেন।

مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَىٰ (11)

হৃদয় অস্বীকার করে নি যা তিনি দেখেছিলেন তাতে।

أَفَتُمَارُونَهُ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ (12)

তোমরা কি তবে তাঁর সঙ্গে বিতর্ক করবে যা তিনি দেখেছেন সে-সন্বন্ধে?

وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ (13)

আর তিনি নিশ্চয়ই তাঁকে দেখেছিলেন অন্য এক অবতরণে --

عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَىٰ (14)

দূরদিগন্তের সিদরাহ্‌-গাছের কাছে,

عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ (15)

তার কাছে আছে চির-উপভোগ্য উদ্যান।

إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ (16)

দেখো! যা আচ্ছাদন করে তা ঢেকে দিয়েছিল সিদরাহ্‌-গাছকে,

مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ (17)

দৃষ্টি বিভ্রান্ত হয় নি এবং তা সীমা ছাড়িয়েও যায় নি।

لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ (18)

তিনি নিশ্চয়ই তাঁর প্রভুর শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলোর মধ্যে চেয়ে দেখেছিলেন।

أَفَرَأَيْتُمُ اللَّاتَ وَالْعُزَّىٰ (19)

তোমরা কি তবে ভেবে দেখেছ লাত ও 'উযযা,

وَمَنَاةَ الثَّالِثَةَ الْأُخْرَىٰ (20)

এবং মানাত, -- তৃতীয় আরেকটি?

أَلَكُمُ الذَّكَرُ وَلَهُ الْأُنْثَىٰ (21)

তোমাদের জন্য পুত্রসন্তান আর তাঁর জন্য কন্যা!

تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰ (22)

এ তো বড়ই অসংগত বন্টন!

إِنْ هِيَ إِلَّا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمْ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ ۚ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنْفُسُ ۖ وَلَقَدْ جَاءَهُمْ مِنْ رَبِّهِمُ الْهُدَىٰ (23)

তারা নামাবলী বৈ তো নয়, যা তোমরা নামকরণ করেছ -- তোমরা ও তোমাদের পূর্বপুরুষরা, যাদের জন্য আল্লাহ্ কোনো সনদ পাঠান নি। তারা তো শুধু অনুমানের এবং যা তাদের অন্তর কামনা করে তারই অনুসরণ করে। অথচ তাদের প্রভুর কাছ থেকে তাদের কাছে পথনির্দেশ অবশ্যই এসে গেছে।

أَمْ لِلْإِنْسَانِ مَا تَمَنَّىٰ (24)

অথবা মানুষের জন্য কি তাই থাকবে যা সে কামনা করে?

فَلِلَّهِ الْآخِرَةُ وَالْأُولَىٰ (25)

কিন্ত শেষটা তো আল্লাহ্‌র, আর প্রথমটাও।

۞ وَكَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِنْ بَعْدِ أَنْ يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَرْضَىٰ (26)

আর মহাকাশমন্ডলে কত যে ফিরিশ্‌তা রয়েছে যাদের সুপারিশ কোনো কাজে আসবে না যতক্ষণ না আল্লাহ্ অনুমতি দেন তার জন্য যাকে তিনি ইচ্ছা করেন ও তিনি সন্তষ্ট হয়েছেন।

إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ لَيُسَمُّونَ الْمَلَائِكَةَ تَسْمِيَةَ الْأُنْثَىٰ (27)

নিঃসন্দেহ যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তারা ফিরিশ্‌তাদের নাম দেয় মেয়েদের নামে।

وَمَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ ۖ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا (28)

আর এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। তারা তো অনুমানেরই অনুসরণ করছে, আর নিঃসন্দেহ সত্যের বিরুদ্ধে অনুমানে কোনো লাভ হয় না।

فَأَعْرِضْ عَنْ مَنْ تَوَلَّىٰ عَنْ ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلَّا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا (29)

সেজন্য তাকে উপেক্ষা করো যে আমাদের উপদেশ থেকে ফিরে যায় আর দুনিয়ার জীবন ছাড়া আর কিছু চায় না।

ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُمْ مِنَ الْعِلْمِ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَىٰ (30)

এইটিই তাদের জ্ঞানের শেষসীমা। নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু -- তিনিই ভাল জানেন তাকে যে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে, আর তিনিই ভাল জানেন যে সৎপথপ্রাপ্ত।

وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ أَسَاءُوا بِمَا عَمِلُوا وَيَجْزِيَ الَّذِينَ أَحْسَنُوا بِالْحُسْنَى (31)

আর মহাকাশমন্ডলে যা-কিছু আছে এবং যা-কিছু আছে পৃথিবীতে তা আল্লাহ্‌রই, যেন যারা মন্দ কাজ করেছে তাদের তিনি প্রতিফল দিতে পারেন যা তারা করেছে সেজন্য, আর যারা সৎকাজ করেছে তাদের তিনি ভালভাবে প্রতিদান দিতে পারেন।

الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلَّا اللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ ۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنْشَأَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَإِذْ أَنْتُمْ أَجِنَّةٌ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ ۖ فَلَا تُزَكُّوا أَنْفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَىٰ (32)

যারা বর্জন করে বড় বড় পাপাচার ও অশ্লীল কাজ -- মুখোমুখি হওয়া ভিন্ন -- তোমার প্রভু পরিত্রাণে নিশ্চয়ই অপরিসীম। তিনি তোমাদের ভালো জানেন যখন থেকে তিনি তোমাদের সৃষ্টির সূচনা করেছেন মাটি থেকে, আর যখন তোমরা ছিলে তোমাদের মায়ের পেটে ভ্রণরূপে। অতএব তোমরা তোমাদের নিজেদের গুণগান করো না। তিনিই ভালো জানেন তাকে যে ধর্মভীরুতা অবলন্বন করে।

أَفَرَأَيْتَ الَّذِي تَوَلَّىٰ (33)

তুমি কি তবে তাকে দেখেছ যে ফিরে যায়,

وَأَعْطَىٰ قَلِيلًا وَأَكْدَىٰ (34)

আর যৎসামান্য দান করে এবং নির্দয়তা দেখায়?

أَعِنْدَهُ عِلْمُ الْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰ (35)

তার কাছে কি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে ফলে সে দেখত পাচ্ছে?

أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِي صُحُفِ مُوسَىٰ (36)

অথবা তাকে কি সংবাদ দেওয়া হয় নি মূসার গ্রন্থে যা আছে সে-সন্বন্ধে,

وَإِبْرَاهِيمَ الَّذِي وَفَّىٰ (37)

এবং ইব্রাহীম সন্বন্ধে যিনি সম্পূর্ণরূপে প্রতিপালন করেছিলেন --

أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ (38)

যথা কোনো ভারবাহী অন্যের বোঝা বহন করবে না,

وَأَنْ لَيْسَ لِلْإِنْسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ (39)

আর এই যে মানুষের জন্য কিছুই থাকবে না যার জন্য সে চেষ্টা না ক’রে,

وَأَنَّ سَعْيَهُ سَوْفَ يُرَىٰ (40)

আর এই যে, তার প্রচেষ্টা অচিরেই দৃষ্টিগোচর হবে,

ثُمَّ يُجْزَاهُ الْجَزَاءَ الْأَوْفَىٰ (41)

তারপর তাকে প্রতিদান দেওয়া হবে পরিপূর্ণ প্রতিদানে,

وَأَنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ الْمُنْتَهَىٰ (42)

আর এই যে, তোমার প্রভুর দিকেই হচ্ছে শেষ-সীমা,

وَأَنَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ (43)

আর এই যে, তিনিই হাসান আর তিনিই কাঁদান,

وَأَنَّهُ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا (44)

আর এই যে, তিনিই মারেন ও তিনিই বাঁচান।

وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنْثَىٰ (45)

আর এই যে, তিনিই সৃষ্টি করেছেন জোড়ায়-জোড়ায় নর ও নারী, --

مِنْ نُطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ (46)

শুক্রকীট থেকে যখন তাকে বিন্যাস করা হয়,

وَأَنَّ عَلَيْهِ النَّشْأَةَ الْأُخْرَىٰ (47)

আর এই যে, তাঁর উপরেই রয়েছে পুনরায় উত্থানের দায়িত্ব,

وَأَنَّهُ هُوَ أَغْنَىٰ وَأَقْنَىٰ (48)

আর এই যে, তিনিই ধনদৌলত দেন ও সুখ-সমৃদ্ধি প্রদান করেন,

وَأَنَّهُ هُوَ رَبُّ الشِّعْرَىٰ (49)

আর এই যে, তিনিই শি'রা নক্ষত্রের প্রভু,

وَأَنَّهُ أَهْلَكَ عَادًا الْأُولَىٰ (50)

আর এই যে, তিনিই ধ্বংস করেছিলেন প্রাচীনকালের 'আদ-জাতিকে,

وَثَمُودَ فَمَا أَبْقَىٰ (51)

আর ছামূদ-জাতিও, তাই তিনি বাকী রাখেন নি,

وَقَوْمَ نُوحٍ مِنْ قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا هُمْ أَظْلَمَ وَأَطْغَىٰ (52)

আর নূহ-এর লোকদলও এর আগে। নিঃসন্দেহ তারা ছিল -- তারাই তো ছিল অত্যন্ত অত্যাচারী ও বেজায় অবাধ্য।

وَالْمُؤْتَفِكَةَ أَهْوَىٰ (53)

আর উলটে ফেলা শহরগুলো -- তিনি ধ্বংস করেছিলেন,

فَغَشَّاهَا مَا غَشَّىٰ (54)

ফলে তাদের তিনি ঢেকে দিয়েছিলেন যা ঢেকে দেয়।

فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكَ تَتَمَارَىٰ (55)

অতএব তোমার প্রভুর কোন অনুগ্রহ সম্পর্কে তুমি বাদানুবাদ করবে?

هَٰذَا نَذِيرٌ مِنَ النُّذُرِ الْأُولَىٰ (56)

প্রাচীনকালের সতর্ককারীদের মধ্যে থেকে ইনি হচ্ছেন একজন সতর্ককারী।

أَزِفَتِ الْآزِفَةُ (57)

আসন্ন ঘটনা সমাগত,

لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ كَاشِفَةٌ (58)

এটি দূর করবার মতো আল্লাহ্ ছাড়া আর কেউ নেই।

أَفَمِنْ هَٰذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ (59)

এই বিবৃতিতে তোমরা কি তাজ্জব হচ্ছ?

وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ (60)

আর তোমরা কি হাসছ, তোমরা কি আর কাঁদবে না?

وَأَنْتُمْ سَامِدُونَ (61)

আর তোমরা তো হেলাফেলা করছ।

فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا ۩ (62)

অতএব আল্লাহ্‌র প্রতি সিজদা করো এবং উপাসনা করো।